১২টি কিডনি রোগের লক্ষণ যা আপনার এবং আমার জানা খুবই প্রয়োজনিয় ।
কিডনি রোগের সার সংক্ষেপ :
- প্রস্রাবে পরিবর্তন
- প্রস্রাব করার সময় ব্যাথা অথবা খুব কষ্ট হবে
- প্রস্রাবের সাথে রক্ত
- ফেনা যুক্ত প্রস্রাব
- শরীর ফুলে যাওয়া
- খুবই ক্লান্ত
- মাথা ঘোরা এবং মনোযোগ এ বিঘ্ন
- সব সময় ঠান্ডা অনুভব করা
- চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি এবং চুলকানি
- নিঃশ্বাসে অ্যামোনিয়া আর মেটালের গন্ধ
- নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট
আপনার কিডনিতে যদি সমস্যা থাকে তাহলে এই ১২টি লক্ষণ দেখতে পাবেন ।
আপনারা যারা কিডনির কোন সমস্যায় ভুগছেন অথবা চেনেন বা জানেন এমন কাউকে তাহলে আপনারা অবশ্যই জানেন কিডনি রোগ একটি নীরব ঘাতক । এই রোগ আপনার এবং আপনার পরিবারের সবাইকে ভাবিয়ে তুলবে । যদি খুব দেরি করে এই রোগ ধরা পড়ে,
আমরা অনেকেই জানিনা আবার জেনেও অনেক সময় অনেক লক্ষণ অবহেলা করি । দুর্ভাগ্যজনকভাবে কখনো কখনো কিডনি রোগের লক্ষণ, রোগীর অবস্থা খুব খারাপ না হলে ধরা পড়ে না । তাই এই রোগের লক্ষণ জানা এবং বুঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ।
খুবই গুরুত্বপূর্ণ কিডনি রোগের ১২টি লক্ষণ যা জানা আপনার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ
- প্রস্রাবে পরিবর্তন
লক্ষণ ১. প্রস্রাবে পরিবর্তন আপনার প্রস্রাব এর পরিমাণ এবং কতবার প্রস্রাব করছেন এই দিকগুলোতে পরিবর্তন আসতে পারে । আপনার প্রস্রাবের পরিমাণ অস্বাভাবিক হারে বাড়তে পারে আবার অস্বাভাবিক হারে কমে ও যেতে পারে । রোজ প্রস্রাবের রঙ গাঢ় হবে আবার কখনো প্রস্রাবের বেগ হবে কিন্তু টয়লেটে গেলে আর প্রস্রাব হবেনা । শেষ কথা হচ্ছে প্রস্রাবে কোনরকম পরিবর্তন দেখা দিলে অবহেলা না করে এগুলো একটি জায়গায় লিখে রাখুন এবং ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন ।
- প্রস্রাব করার সময় ব্যাথা অথবা খুব কষ্ট হবে
লক্ষণ ২. প্রস্রাব করার সময় ব্যথা এবং খুব কষ্ট হবে এই ধরনের সমস্যা হলে খুব সহজেই প্রতিকার করা যায় । কিন্তু অবহেলা করলে আপনার কিডনি আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা থাকে এই ধরনের সমস্যায় মাঝে মাঝে জ্বর এবং ঘাড়ে ব্যথা হতে পারে ।
- প্রস্রাবের সাথে রক্ত
লক্ষণ ৩. প্রস্রাবের সাথে রক্ত এই সমস্যা সরাসরি কিডনি রোগের সাথে সম্পর্কিত কোনোভাবেই এই অবস্থা অবহেলা করা উচিত হবে না । প্রস্রাবে রক্ত মানি আপনাকে খুব দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে । এটি কিডনি রোগের একটি প্রধান লক্ষণ প্রস্রাবে রক্ত অনেক সময় ব্লাড ক্যান্সারের সাথে সম্পর্কিত ।
- ফেনা যুক্ত প্রস্রাব
লক্ষণ ৪. ফেনাযুক্ত প্রস্রাব হয়তো ভাবছেন অনেক কারণই ব্লাডার সাথে যুক্ত এর কারণ হচ্ছে ব্লাডার এবং কিডানি এমনভাবে সম্পর্কিত যে কিডনিতে সমস্যা হলে ব্লাডারে সবার আগে সেই লক্ষণ দেখা যায় । । খেয়াল করুন প্রস্রাবের সময় ফেনা জমে যাচ্ছে নাকি ।
- শরীর ফুলে যাওয়া
লক্ষণ ৫. ফুলে যাওয়া আপনার শরীরের বেশিরভাগ দূষিত পদার্থ আর পানি আপনার কিডনি বের করে দেয় । এই কাজটা যখন কিডনি ঠিকভাবে করতে পারে না তখন এগুলো আপনার শরীরের জমতে থাকে এমন পরিস্থিতিতে একজন মানুষের বেশ কিছু জায়গায় ফুলে যেতে পারে । যেমন পা, পায়ের গোড়ালি মুখ-হাত ।
- খুবই ক্লান্ত
লক্ষণ ৬. খুবই ক্লান্ত যখন আপনার কিডনি ঠিকভাবে কাজ করে তখন এরিথ্রোপোয়েটিন নামের হরমোন উৎপন্ন হয় যা আপনার লোহিত রক্তকণিকা কে অক্সিজেন বহন সাহায্য করে । আর কিডনি ঠিকভাবে কাজ না করলে এই হরমোনের পরিমাণ কমে যায় । এই অবস্থায় আপনার লোহিত রক্ত কণিকায় অক্সিজেনের পরিমাণ কমে গিয়ে আপনি খুব ক্লান্ত হয়ে পড়েন ।
- মাথা ঘোরা এবং মনোযোগ এ বিঘ্ন
লক্ষণ ৭. মাথা ঘোরা এবং মনোযোগের বিঘ্ন আপনার কিডনি যখন আপনার দুর্বলতার কারন হয় ঠিক একই সময়ে অক্সিজেন স্বল্পতার কারণে আপনার মস্তিষ্কে ব্যাঘাত ঘটে । আপনার মাথা ঘুরাতে থাকে এবং আপনি কোথাও মনযোগ দিতে ব্যর্থ হন । আপনার মস্তিষ্কে অক্সিজেন সরবরাহ কমে গেলে তা ধীরে কাজ করতে থাকে ।
- সব সময় ঠান্ডা অনুভব করা
লক্ষণ ৮. সব সময় ঠান্ডা অনুভব করা আপনার যদি রক্তশূন্যতা হয় তাহলে অনেক সময় কি কি রোগ হতে পারে এমন অবস্থায় গরম স্থানেও আপনার ঠান্ডা অনুভব হবে । ফাইল অন্ড প্রাডিস এক এক ধরনের কিডনি ইনফেকশন যা থেকে জ্বর ঠান্ডা হতে পারে ।
- চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি এবং চুলকানি
লক্ষণ ৯. চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি এবং চুলকানি । অনেক সময় আমরা এলার্জি ভেবে ভুল করতে পারি চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি কিডনি রোগের কারণ হতে পারে । কিডনি যখন দূষিত পদার্থ শরীর থেকে বের করতে পারে না । তখন রক্তে তা জমে যায় এই থেকে চামড়ায় লাল ফুসকুড়ি এবং চুলকানি হয় ।
- নিঃশ্বাসে অ্যামোনিয়া আর মেটালের গন্ধ
লক্ষণ ১০. নিঃস্বাসে অ্যামোনিয়া আর মেটালের গন্ধ আপনার কিডনি যখন ফেল করবে তখন রক্তে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে যাবে । এমন পরিস্থিতিতে ইউরিয়া আপনার লালাতে মিশে যায় আর মুখ থেকে অ্যামোনিয়া যুক্ত দুর্গন্ধ বের হয় ।
- বমি বমি ভাব
লক্ষণ ১১. বমি বমি ভাব আপনার কিডনি বিকল করে সব সময় বমি বমি ভাব থাকবে, এর কারণ হচ্ছে আপনার শরীরে জমে যাওয়া প্রচুর পরিমাণ দূষিত পদার্থ কিডনি বের করে দিতে পারছে না । যেগুলো শরীরে থাকার কথা নয় তাই আপনার বমি বমি ভাব হয় অথবা বমি হয় ।
- নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট
লক্ষণ ১২. নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট আপনার কিডনি রোগ যদি খুব জটিল হয়ে যায় তখন ফুসফুসে পানি জমে এবং এতে সমস্যা করে এর সাথে থাকে রক্তশূন্যতা যা অক্সিজেন সরবরাহ কমিয়ে দেয় । এটা মনে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ এই লক্ষণগুলোর মধ্যে যেকোনো একটি থাকলে তার মানে এই নয় যে আপনার কিডনিতে সমস্যা আছে অনেকগুলো লক্ষণীয় অন্য কোন রোগের লক্ষণ কিংবা ইনফেকশন হতে পারে তাই ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে সঠিক কারণ জেনে নেয়া উত্তম, হয়তো আপনি কিডনি রোগ থেকে মুক্তি পাবেন ।
কিডনি রোগের লক্ষণ, দীর্ঘস্থায়ী কিডনি রোগের লক্ষণ, কিডনি রোগের লক্ষণ ও চিকিৎসা, সুস্থ কিডনির লক্ষণ, কিডনি রোগের কারণ,কিডনি রোগের প্রতিকার